মুন্সীগঞ্জে পদ্মা নদীর ভাঙ্গন : দিশেহারা কয়েকটি গ্রামের মানুষ

 প্রকাশ: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১০:৫৭ অপরাহ্ন   |   জনদুর্ভোগ



মো. কায়সার হামিদ (মুন্সীগঞ্জ ) : 
প্রমত্তা পদ্মার ভাঙ্গনে দিশেহারা মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়ের কয়েকটি গ্রামের নদী তীরের মানুষ। গত কয়েক দিনের অব্যাহত ভাঙ্গনে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে বসতবাড়ি, ফসলি জমিসহ বিস্তীর্ণ এলাকা। ভাঙ্গন আতংকে পূর্বপুরুষের ভিটেমাটি থেকে অনেকেই সরিয়ে নিয়েছে বসতঘর। ভিটেমাটি হারিয়ে আশ্রয়হীন দেড় শতাধিক পরিবার। জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙ্গন রোধ করা সম্ভব নয় বলে স্থায়ী বাঁধের সমাধান চান গ্রামবাসী। মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি মো. কায়সার হামিদের তথ্য চিত্রে ডেস্ক রিপোর্ট।  

প্রমত্তা পদ্মার আগ্রাসী থাবায় নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে জেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নের সর্দারকান্দি, শম্ভু হালদার কান্দি, মহেশপুর ও শান্তনগর গ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকা। এছাড়া ভাঙ্গন হুমকিতে রয়েছে ওই ইউনিয়নের বাংলাবাজার, ইসলামপুর ও ভুত্তারচর গ্রাম। চোখের সামনে প্রমত্তা পদ্মার গহীনে হারিয়ে যাচ্ছে পূর্বপুরুষের রেখে যাওয়া ভিটেমাটি। বসতভাড়ি ও ফসলি জমি হারিয়ে দিশেহারা ওই এলাকার মানুষ।



পদ্মার ভাঙ্গনে ইতিমধ্যে প্রায় দের শতাধিক ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় দেড় শতাধিক বাড়িঘর। এদিকে পদ্মায় বিলীন হয়েছে শত বছরের মন্দিরও। ভাঙ্গন আতঙ্ক রয়েছে আরো শতাধিক বাড়িঘর। 

ভিটেমাটি হারিয়ে আশ্রয়হীন দেড়শতাধিক পরিবার। নিজেদের জায়গা নদীতে বিলীন হওয়ার অন্যের জায়গায় ঘর তুলে থাকতে হচ্ছে। গত কয়েকদিনে প্রায় দেড় কিলোমিটার এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে।


তবে ভাঙ্গন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে ফেলা হচ্ছে জিও ব্যাগ। নদী ভাঙ্গন রোধে স্থায়ী বেরিবাঁধ নির্মাণের কথা জানিয়েছেন জনপ্রতিনিধিরা।


বাংলাবাজার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন পীর বলেন, প্রতি বছর পদ্মার ভাঙ্গনে আমার এলাকার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ইউনিয়নের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলো ভেঙে যাচ্ছে। এছাড়াও আতঙ্কে রয়েছেন ইউনিয়নের স্কুল, মসজিদ মাদ্রাসা সহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান। জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙ্গন রোধ করা সম্ভব নয়। তাদের দরকার পূর্ণবাসন কেন্দ্র ও স্থায়ী বেরিবাঁধ নির্মাণ।


পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঢাকা জোনের নির্বাহী প্রকৌশলী রণেন্দ্র শংকর চক্রবর্ত্তী বলেন, পদ্মা নদীর বাম তীরে যে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে তা ইতিপূর্বে আমরা পরিদর্শন করেছি। এরই মধ্যে প্রায় ২ কোটি ৩৫ লাখ টাকার একটি বরাদ্দ এসেছে। যা ৪১ হাজার জিও ব্যাগ ও ১ হাজার জিও টিউব ফেলা হবে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এ কাজ সম্পন্ন করা হবে। এতে ভাঙ্গনের তীব্রতা কমবে বলে আশাবাদী পানি উন্নয়ন বোর্ড। 

তিনি আরো বলেন, ভাঙ্গন রোধে আগামী শুষ্ক-মৌসুমের জন্য প্রায় ৯ কোটি টাকার অর্থ চাহিদা পানি উন্নয়ন অধিদপ্তর পাঠানো হয়েছে। এই বরাদ্দ পাস হলে পদ্মা নদী ভাঙ্গন রোধে জিও ব্যাগ ফেলে স্থায়ী বাঁদের সমাধান করা হবে। এছাড়া বর্তমানে ভাঙ্গল কবলিত পরিবারদের পূর্ণবাসন কেন্দ্রে ফিরে নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে। তবে জিও ব্যাগ নয়, পদ্মার নদী ভাঙ্গন রোধে স্থায়ী বেরিবাঁধের সমাধান চান নদীগর্ভে ঘরবাড়ি বিলীন হওয়া সাধারণ মানুষ।