মৌসুমী কালবৈশাখী ঝড়ে প্রয়োজন সতর্কতা

 প্রকাশ: ১৫ এপ্রিল ২০২২, ০৩:১৭ অপরাহ্ন   |   সম্পাদকের কথা



বৈশাখের আগমন ধ্বনির সঙ্গে সঙ্গে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে হাজির হয়েছে মৌসুমী কালবৈশাখী ঝড়। ইতিমধ্যে ঝড়ের তাণ্ডবে দেশের বিভিন্ন জেলায় প্রাণহানিসহ ফল-ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

কালবৈশাখী আসলে এক ধরনের সাময়িক বৃষ্টিপাত ও বজ্রঝড়। সাধারণত এপ্রিল থেকে মে মাসে অর্থাৎ বৈশাখ মাসে বাংলাদেশ ও ভারতের কিছু অঞ্চলে এই বজ্রঝড় দেখা দেয়। কাল শব্দের অর্থ ধ্বংস ও বৈশাখ মাসে এর উৎপত্তি বলে একে কালবৈশাখী নামে ডাকা হয়। সাধারণ ঝড়ের সঙ্গে কালবৈশাখীর মূল পার্থক্য হচ্ছে, কালবৈশাখী ঝড়ের সঙ্গে বিদ্যুৎ চমকায় এবং বজ্রপাত হয়। বাংলাদেশে প্রায় প্রতিবছরই কালবৈশাখী সংঘটিত হয়।

Teaser add
কালবৈশাখী প্রভাবিত অঞ্চলের গরম অনেকটা কমে গিয়ে কিছুটা হলেও স্বস্তি দেয় ও অপেক্ষাকৃত আরামদায়ক আবহাওয়া সৃষ্টি করে। এছাড়া স্বল্প ও আগাম বৃষ্টিপাতের ফলে আম, লিচু ও পাটের ফলন ভালো হয়ে থাকে।

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন

দেশের আবহাওয়া বিভাগ উন্নত প্রযুক্তির সাহায্যে আগে থেকেই এই ঝড়ের বিষয়ে সাধারণত সতর্ক করে থাকে অঞ্চলভেদে মানুষজনকে। তবে খুব অল্পসময়ের মধ্যে এই ঝড় প্রকোট হওয়াতে ক্ষয়ক্ষতিও হয় অনেক। এবিষয়ে প্রয়োজন আগাম প্রচার ও ব্যাপক জনসচেতনতা।

কালবৈশাখী ঝড়ে বসতবাড়ির আশেপাশে থাকা গাছপালা উপড়ে স্থাপনার উপরে পড়ে প্রাণহানি ও ফসলহানির ঘটনা ঘটে। কয়েকযুগ ধরে নার্সারি ভিত্তিক চারাগাছ লাগানোর ফলে গাছের ভিত্তিমূল থাকছে না বেড়ে ওঠা গাছগুলিতে। ওইসব গাছ বছরের পর বছর সময় নিয়ে বড় হয়ে উঠলেও তার স্থায়ীত্ব শক্তি কম হয়, কালবৈশাখী ঝড় ছাড়াও সাধারণ ঝড়ে উপড়ে পড়ে। বীজ থেকে সরাসরি গাছ লাগানোর বিষয়টি উৎসাহিত করা যেতে পারে। এবিষয়ে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে উদ্যোগ প্রয়োজন। এছাড়া বড় গাছের সরাসরি নিচে ঘর নির্মাণের বিষয়েও বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেয়া জরুরি। ঝড়ের শঙ্কা দেখা দিলে পাকা বাড়ি বা নিরাপদ আশ্রয়ে চলে গেলে হতাহতের ঘটনা এড়ানো সম্ভব।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় বাংলাদেশের মানুষের রয়েছে ঐতিহ্যগত অভিজ্ঞতা। বন্যা, ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের মতো দুর্যোগ সামলে জীবন-জীবিকা এগিয়ে নিতে দেশের মানুষ বেশ দক্ষ। সেই তুলনায় কালবৈশাখী ঝড় মৌসুমী উপদ্রব মাত্র। সম্মিলিত সচেতনতা ও সাধারণ কিছু সতর্কতায় যা মোকাবিলা করা সম্ভব বলে আমরা মনে করি।