ডায়রিয়া পরিস্থিতি : চাপ সামাল দিতে চিকিৎসক-নার্সদের হিমশিম খেতে হচ্ছে

 প্রকাশ: ২৮ মার্চ ২০২২, ১১:৫৩ অপরাহ্ন   |   সম্পাদকের কথা


ঋতু পরিবর্তন ও প্রচণ্ড গরমের কারণে রাজধানীতে ডায়রিয়ার প্রকোপ হঠাৎ বেড়ে গেছে। চিকিৎসার জন্য মহাখালীর আন্তর্জাতিক উদরময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশ (আইসিডিআরবি)’তে আক্রান্ত রোগীরা ভিড় করতে শুরু করেছে। চাপ সামাল দিতে চিকিৎসক-নার্সদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।

আইসিডিআরবি সূত্রমতে, গরমের মৌসুমে প্রতিদিন গড়ে ৭০০ থেকে ৮০০ রোগী ভর্তি হতো। কিন্তু এবারের গরমে রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি। ১৬ মার্চ থেকে ২৪ মার্চ পর্যন্ত ৯ দিনের মধ্যে নতুন ভর্তি হওয়া ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা কোন দিনও এক হাজারের নিচে নামেনি। পরিস্থিতি দিন দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে বলেও গণমাধ্যমে প্রকাশ।

আইসিডিআরবি’র তথ্যে আরেকটি বিষয় লক্ষ্যণীয় যে, মূলত রাজধানীর নির্দিষ্ট কিছু এলাকা থেকেই রোগী বেশি আসছে। আর ওইসব জায়গাতে রয়েছে পানির সমস্যা, পানিতে ছিল প্রচুর গন্ধ। ভর্তি হওয়া রোগীদের বেশিরভাগই বলেছে, পানি পানের পরেই তাদের সমস্যা হয়েছে। অনেকে বলেছে, তারা ওয়াসার পানি ফুটিয়ে খায়নি।


সাম্প্রতিক সময়ে পানির দাম বাড়ানোর কথায় আলোচনায় থাকা ওয়াসা সুপেয় পানির সরবরাহ নিশ্চিতে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে দায়বদ্ধ থাকলেও এই নেতিবাচক পরিস্থিতিতে তারা কী করছে, তা এখনও স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে না। দ্রুত তাদের এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া জরুরি বলে আমরা মনে করি।

ডায়রিয়া পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ও ডায়রিয়া থেকে বাঁচতে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। স্বাস্থ্য বুলেটিনের মাধ্যমে তারা জানিয়েছে, প্রতিদিনকার কাজকর্মে বিশুদ্ধ পানি ব্যবহার করলে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে এবং সবসময় সুপেয় পানি পান করলে ডায়রিয়া রোগ থেকে মুক্ত থাকা সম্ভব। সরকারি হাসপাতালগুলোতে খাবার স্যালাইন, আইভি ফ্লুইড স্যালাইন, পানি বিশুদ্ধিকরণ ট্যাবলেট এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় উপকরণের সরবরাহ রয়েছে। অল্প ডায়রিয়া থাকতেই চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে। সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে এ রোগ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব।

করোনা পরবর্তী সময়ে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে গেছে। প্রচণ্ড এই গরম ও ডায়রিয়াজনিত পরিস্থিতির কারণে শিক্ষার্থীদের সচেতন করতে হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিশ্চিত করতে হবে নিরাপদ পানির। এছাড়া রাস্তার মুখরোচক খাবার, যেমন- ফুচকা, চটপটি, ভেলপুরি বা ডালপুরি এগুলো পরিহার করতে হবে। শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি কর্মমুখী সবাইকে সাবধান হতে হবে যথাসম্ভব বাইরের পানি পানের বিষয়ে।

চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের আশা, বৃষ্টিপাত হলে বা কোনো কারণে তাপমাত্রা কমে আসলে ব্যাকটেরিয়াজনিত ডায়রিয়ার প্রকোপ কমে আসবে। তবে আমরা মনে করি, যতক্ষণ না পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসছে ততক্ষণ আমাদের সাবধান থাকতে হবে, আর সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কর্তৃপক্ষকে নিতে হবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা।