লতাপাতা-গোবরে তৈরি হচ্ছে জৈব সার

 প্রকাশ: ১১ মে ২০২২, ১২:২০ অপরাহ্ন   |   সারাদেশ


 ধানসহ বিভিন্ন ধরনের শাক সবজি, কৃষিজাত ফসল উৎপাদন ও ফলন বাড়াতে রাসায়নিক সারের ওপর নির্ভরশীলতা ব্যাপক। অনেক সময় প্রয়োজনীয় রাসায়নিক সার বা কীটনাশক পাওয়া দুষ্কর হয়ে পড়ে, সঙ্গে বাড়তি দাম তো আছেই! এমন অবস্থায় কৃষকদের কষ্ট লাঘবে এগিয়ে এসেছেন খাগড়াছড়ির তরুণ উদ্যোক্তা মোস্তফা শিবলী।


জেলার এ বাসিন্দা পানছড়ি উপজেলার ফাতেমা নগরে গত সাত মাস আগে নিজ নামে প্রতিষ্ঠা করেছেন জৈব সার তৈরি কারখানা। গরুর গোবর ও বিভিন্ন গাছের লতাপাতা মিশিয়ে এক ধরনের জৈব সারও তৈরি করেছেন তিনি।

‘শিবলী ফার্মস’র এ সার স্থানীয় কৃষকদের দৈনন্দিন কষ্ট নিরসণে সহায়ক হবে বলে আশাবাদী অন্যান্য উদ্যোক্তারাও।  খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মোস্তফা শিবলীর জৈব সার তৈরি কারখানাটি ফাতেমা নগরে ১০ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত। কারখানায় তৈরি হয়েছে স্থানীয় মানুষের কর্মসংস্থান, যেখানে কাজ করেন ৩৫ থেকে ৪০ জন। শিবলী ফার্মস’র উৎপাদন লক্ষ্যমাত্র নির্ধারণ করা হয়েছে দৈনিক ১০ টন। এখন প্রতিদিন ৩ টন করে সার উৎপাদন হচ্ছে। সার তৈরির এমন উদ্যোগে আশার সঞ্চার হয়েছে স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে। জেলায় প্রথম কোন জৈব সার উৎপাদন কেন্দ্র গড়ে ওঠায় খুশি স্থানীয় বাসিন্দারাও। তারা মনে করেন, প্রয়োজনের সময় সার নিয়ে যে সংকট দেখা যেত, সেটা আর থাকবে না। এখন কিছু মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে। চাহিদা অনুসারে পরিধি বাড়ালে আরও অনেকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।  

শিবলী ফার্মস’র ম্যানেজার আমজাদ হোসেন মজুমদার বলেন, জৈব সার ব্যবহার উপযোগী কিনা পরীক্ষায় সংশ্লিষ্ট দপ্তরে নমুনা পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়া গেলে পুরোদমে সার বাজারজাত করা হবে।  

তিনি জানান, নিজেদের বাগানে ফার্মের উৎপাদিত সার প্রয়োগ করে ভালো ফলাফল পাওয়া গেছে। খাগড়াছড়ির ৩টি উপজেলার ১২শ কৃষককে পাঁচ কেজি করে সার দিয়েছেন তারা। এ বিষয়ে মোস্তফ শিবলী বলেন, পরীক্ষামূলকভাবে স্থানীয় কৃষকরা সার নিয়ে প্রয়োগ করছেন। আশানুরুপ ফলাফল পাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন। কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে সারের নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে গেছে। মাসখানেকের মধ্যে ফলাফল পাব।  

সরকার সুদৃষ্টি দিলে প্রকল্পটি কৃষক পর্যায়ে ভূমিকা রাখতে পারবে বলেও জানান তিনি। উপজেলার ভারপ্রাপ্ত কৃষি কর্মকর্তা মো. নাজমুল ইসলাম মজুমদার জানান, কৃষক পর্যায়ে জৈবসারের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। শিবলী ফার্মস থেকে সার নিয়ে অনেক কৃষক উপকৃত হয়েছে বলেও জেনেছেন তারা। সরকারি অনুমোদর পেলে সার নিয়ে প্রতিবছর যে সংকট দেখা দেয় তা নিরসণ হবে বলে তিনিও মনে করেন।