জুমার নামাজের আগে ভালোভাবে গোসল করা অন্যতম আমল
মুসলমানদের জন্য জুমার দিন হচ্ছে সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ দিন। এই দিনের ফজিলত সম্পর্কে বহু হাদিস বর্ণিত হয়েছে। রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, জুমার দিন সপ্তাহের মধ্যে শ্রেষ্ঠ এবং তা আল্লাহর কিাছে অধিক সম্মানিত। (ইবনে মাজাহ: ১০৮৪)
জুমার দিনের বিশেষ কিছু আমল ও আদব রয়েছে। এর মধ্যে গোসল করাও অন্তর্ভুক্ত। এরপর আগেভাগে হেঁটে মসজিদে যাওয়া, ইমামের পাশে বসা, অনর্থক কথা-কাজ থেকে নিজেকে রক্ষা করা এবং মনোযোগ দিয়ে খুতবা শোনা খুব গুরুত্বপূর্ণ ও ফজিলতপূর্ণ আমল।
আউস ইবনে আউস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রাসুল (স.)-কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করাবে এবং নিজেও গোসল করবে অথবা উত্তমরূপে গোসল করবে এরপর ওয়াক্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মসজিদে আসবে, আসার সময় হেঁটে আসবে, কোনো বাহনে চড়বে না, ইমামের কাছাকাছি বসবে, এরপর দুটি খুতবা মনোযোগ দিয়ে শুনবে এবং (খুতবার সময়) কোনো অনর্থক কাজকর্ম করবে না, সে মসজিদে আসার প্রতিটি পদক্ষেপে একবছর নফল রোজা ও একবছর নফল নামাজের সওয়াব পাবে। (আবু দাউদ: ৩৪৫)
উল্লিখিত হাদিসে বর্ণিত সহজ কিছু কাজে প্রতি কদমে কদমে মিলবে পূর্ণ এক বছর নফল রোজা ও নফল নামাজের সওয়াব। এই সুযোগ অন্তত মুমিন বান্দাদের হাতছাড়া করার কথা নয়। অন্য হাদিসে সালমান ফারসি (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করল, সাধ্যমতো পবিত্র হলো, তেল ব্যবহার করল, ঘর থেকে সুগন্ধি ব্যবহার করল, অতঃপর মসজিদে এলো, সেখানে দুজন মুসল্লির মধ্যে ফাঁক করে সামনে এগিয়ে যায় না, নির্দিষ্ট পরিমাণ নামাজ পড়ল, অতঃপর ইমাম কথা শুরু করলে চুপ থাকল; তাহলে আল্লাহ তাআলা তাঁর দুই জুমার মধ্যবর্তী সময়ের গুনাহ মাফ করবেন। (বুখারি: ৮৮৩)
হাদিসটি খেয়াল করলে দেখবেন, দুই জুমার মধ্যবর্তী সময়ের সব গুনাহ মাফের জন্য জুমার নামাজের আগে উত্তমরূপে গোসল করা ও সাধ্যমতো পবিত্র হওয়া অন্যতম আমল। তাহলে, জুমার দিন গোসল করার সঠিক সময় কোনটি?
জুমার দিন কোন সময় গোসল করলে এ সুন্নত আদায় হবে এ ব্যাপারে ফকিহগণ বলেন, জুমার প্রস্তুতি হিসেবে এমন সময় গোসল করা উত্তম যেন ওই অজু-গোসল দিয়েই জুমার নামাজ আদায় করা সম্ভব হয়। অর্থাৎ জুমার নামাজ পড়তে যাওয়ার আগে যে সময় মানুষ মসজিদে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়, ওই সময়টিই জুমার দিনের গোসল করার সঠিক সময়।
তবে বিশুদ্ধ মত অনুযায়ী জুমার নিয়তে দিনের প্রথম ভাগে গোসল করলেও সুন্নত আদায় হয়ে যাবে। আবার গোসল করার প্রয়োজন হবে না।
আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে কোরআন-হাদিসের দিকনির্দেশনা অনুযায়ী জুমার দিনের সকল আদব ও আমল যথাযথ পালন করার তাওফিক দান করুন। সুন্দরভাবে ইখলাসের সঙ্গে জুমার নামাজ পড়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।