৩২ বছর ধরে জব্বারের বলীখেলার রেফারি আব্দুল মালেক

 প্রকাশ: ২৪ এপ্রিল ২০২২, ০৮:১৯ অপরাহ্ন   |   বিনোদন


 সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে নগরের লালদীঘির পাড়ে ঐতিহ্যবাহী আব্দুল জব্বারের বলীখেলা উপলক্ষে শুরু হয়েছে বৈশাখী মেলা। সোমবার (২৫ এপ্রিল) বিকেলে শুরু হবে বলীখেলা।


 
জব্বারের বলীখেলার ১১৩তম আসরে রেফারির দায়িত্ব পালন করবেন আব্দুল মালেক, যিনি এই দায়িত্ব পালন করছেন ৩২ বছর ধরে।

আব্দুল মালেক বাংলানিউজকে বলেন, আমি ফুটবল খেলোয়াড় ছিলাম। বদরপাতির আব্দুল হামিদ এবং আমি ব্রাদার্স ইউনিয়ন পরিচালনা করতাম। সেটা তখন বদরপাতির টিম ছিল। হামিদ সাহেব, নজরুল ইসলাম লেদু, ফয়েজ ও মামুনরা আমাকে বলীখেলায় নিয়ে যায়। ১৯৮৯ সালে সহকারী রেফারি হিসাবে বলীখেলা পরিচালনা শুরু করি। ফয়েজ উল্লাহ’র মৃত্যু ও আরেকজন লন্ডনে চলে যাওয়াতে আমার ওপর পড়ে রেফারির দায়িত্ব।  
 
‘জব্বার মিয়ার বলীখেলায় সহকারী রেফারি হিসেবে শুরু করেছিলাম। পরে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বলীখেলায় রেফারির দায়িত্ব পালন করেছি। বিমানবাহিনী, ঢাকা ও বগুড়ায় সাবেক সিএমপি কমিশনার ইকবাল বাহারের বাড়ি এলাকার বলীখেলায় রেফারির দায়িত্ব পালন করেছি। সিআরবিতে সাহাব উদ্দীনের বলীখেলায়ও শুরু থেকে আমি রেফারির দায়িত্ব পালন করেছি’।

তিনি বলেন, রামুর দিদার বলি ও বান্দরবানের একজন বলী যৌথ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য চেষ্টা করছিল। কেউ কাউকে পরাজিত করতে পারছিল না। এসময় সাবেক মেয়র মরহুম এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী এগিয়ে এলেন। তিনি এক থেকে একশ পর্যন্ত গুনলেন। এরপর   তাদের দুজনকেই বহিষ্কার করলেন। পরে অন্য দুইজন বলীকে নিয়ে ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছিল।  
রেফারির দায়িত্ব পালন করতে ভালো লাগে জানিয়ে সাবেক চসিক কাউন্সিলর আব্দুল মালেক বলেন, জব্বার মিয়ার বলীখেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও জব্বার মিয়ার নাতি শওকত আনোয়ার বাদল বলেছেন-আমাকে আমৃত্যু রেফারির দায়িত্ব পালন করতে হবে। রেফারির দায়িত্ব পালন করতে দেখে দেশ ও দেশের বাইরে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আত্মীয়-স্বজন ফোন করেন, খুশি হন।  

ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে দেশের যুব সমাজকে সংগঠিত করতে ১৯০৯ সালে স্থানীয় আব্দুল জব্বার সওদাগর নগরের লালদীঘি মাঠে আয়োজন করেন কুস্তি প্রতিযোগিতা। পরে এটি আব্দুল জব্বারের বলীখেলা নামে পরিচিত হয়। বাংলা পঞ্জিকা অনুসারে বৈশাখ মাসের ১২ তারিখে অনুষ্ঠিত হয় এই বলীখেলা।  

কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে পরপর দুই বছর এ কুস্তি প্রতিযোগিতার আয়োজন করা যায়নি। মূলত লালদীঘির মাঠেই এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। কিন্তু এ মাঠে ২ কোটি ২৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ঐতিহাসিক ছয় দফা মঞ্চ, বিভিন্ন ঐতিহাসিক ঘটনার ম্যুরাল স্থাপন, কিডস কর্নার, ঘাস লাগানো, সীমানা প্রাচীর, ফটক নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতর। তাই মাঠটি এখনো উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়নি। সেজন্য  লালদীঘি সংলগ্ন জেলা পরিষদ মার্কেট চত্বরে ২০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ২০ ফুট প্রস্থের বালুর মঞ্চে হবে জব্বার মিয়ার বলীখেলা।