ক্যান্টিনের খাবারের মান বাড়ানো ও ভর্তুকি দিয়ে দাম কমানোর দাবীতে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট এর মানববন্ধন অনুষ্ঠিত

 প্রকাশ: ১৮ নভেম্বর ২০২১, ১১:০৫ অপরাহ্ন   |   শিক্ষা



আজ ১৮ নভেম্বর ২০২১, কলা ভবনের সামনে- ক্যান্টিনের খাবারের মান বাড়ানো ও ভর্তুকি দিয়ে দাম কমানোর দাবীতে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আয়োজনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। সাধারণ সম্পাদক প্রগতি বর্মণ তমার সঞ্চালনায় এবং সভাপতি সালমান সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন সহ-সভাপতি সাদেকুল ইসলাম সাদিক, সাংগঠনিক সম্পাদক আরাফাত সাদ ও প্রচার-প্রকাশনা সম্পাদক মোজাম্মেল হক।

সভাপতি তার বক্তব্যে বলেন, ক্যান্টিন মালিকেরা বলছে জাতীয় বাজারে খাদ্যদ্রব্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় হলের খাবারের দামও বাড়ানো হয়েছে। অথচ আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের খাবারের দাম সবসময়ই বাজারের মূল্য থেকে অনেক কম ছিল। আগে দেখা যেতো বাজারের মূল্যের তারতম্যের সাথে হলের খাবারের দাম উঠানামা করতো না এবং সেটা উচিৎও না। কিন্তু বর্তমানে মালিকেরা ভিন্ন কথা বলছে। এটা সম্ভব হয়েছে শুধুমাত্র এই কারণেই যে হলের ক্যান্টিনগুলোর ব্যবস্থাপনা বেসরকারিভাবে হচ্ছে। প্রশাসন নিজে দায়িত্ব না নিয়ে বিভিন্ন মালিকানার হাতে তুলে দিচ্ছে। এতে মালিকেরা তাদের ব্যবসায়িক স্বার্থে ইচ্ছেমত দাম নির্ধারণ করছে। দাম নিয়ন্ত্রণে প্রভোস্ট কমিটির যে  দায়িত্ব ছিল তা তারা পালন করছে না। আবার আমরা দেখতে পাচ্ছি ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বিনা টাকায় খেয়ে চলে যাচ্ছে, হলে তাদের চরম দখলদারিত্ব থাকায় মালিকরা তাদের কিছু বলতে পারছেনা। এই ধরনের ঘটনাও দাম বাড়ানোর সুযোগ করে দিচ্ছে।

 

বক্তারা বলেন, হলের ক্যান্টিনগুলোতে একদিকে খাবারের দাম বেড়েছে আরেকদিকে মান ও পরিমাণ উভই কমেছে। তিন টাকার পরোটা পাঁচ টাকা হয়ে গিয়েছে। মাছ-মুরগি ইত্যাদির দামও বেড়েছে। হলের মেসগুলোতে মিল রেট ৩০-৩৫ টাকা থেকে ৪৫-৫৫ টাকা বেড়েছে। দেখা যাচ্ছে প্রতিবেলায় খাবারে ১০ থেকে ১৫ টাকা বেশি খরচ করতে হচ্ছে। আবার শিক্ষার্থীদের পরিবারের আয় এই করোনাকালিন সময়ে আরো কমেছে। এরূপ অবস্থায় এই ব্যয় বহন করা আমাদের পক্ষে অসম্ভব। প্রশাসন আমাদের এই অবস্থা ভালো করেই জানে, কিন্তু দাম কমানোর কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। গত একমাস ধরে শিক্ষার্থীরা বাড়তি মূল্য দিয়েই খাচ্ছে, কিন্তু প্রশাসন দাম কমানোর জন্য কিছুই করছে না। আমরা জানি, বিশ্ববিদ্যালয়ে খাবারের দাম নিয়ন্ত্রণের প্রধান উপায় হলো ভর্তুকী বৃদ্ধি করা, কিন্তু প্রশাসন সেটা করছে না। বছর শেষে বাজেটের অব্যবহৃত অংশ তারা ইউজিসিকে ফেরত দিয়ে দিচ্ছে, তারপরও ভর্তুকী বাড়াচ্ছে না। শুধু খাবারই নয়, প্রশাসন ক্রমাগত বিভিন্ন ব্যয়ের ভার শিক্ষার্থীদের উপর চাপিয়ে দিচ্ছে। ফলে বেতন-ফিও বৃদ্ধি পাচ্ছে। ক্রমাগত বেসরকারীকরণ চলছে। আপনারা জানেন ২০০৬ সালে গৃহীত বিশ্ববিদ্যালয় কৌশলপত্রেই উল্লেখ ছিল যে ধীরে ধীরে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আয় বাড়াতে হবে এবং সেই নিজস্ব আয় বলতে বোঝানো হয়েছে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নেওয়া বিভিন্ন বেতন ফি।

বক্তারা, সর্বজনের বিশ্ববিদ্যালয়কে গুটিকয়েক ব্যক্তির মুনাফার উৎসে রূপান্তর যাতে না হতে পারে, সেজন্য সংঘবদ্ধভাবে সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে সংগ্রাম করার এবং সেই সংগ্রামের অংশ হিসেবে ক্যান্টিনের খাবারের দাম কমানোর আন্দোলনে যোগ দেওয়ার আহবান জানান।