পোল্ট্রি খাতে ৩৫ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ

 প্রকাশ: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৯:৪৬ অপরাহ্ন   |   অর্থ ও বাণিজ্য


বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ড্রাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিলের (বিপিআইসিসি) ২০২১ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, পোল্ট্রি শিল্পে প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ রয়েছে। দেশে পোল্ট্রি শিল্পে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় ৬০ লাখ শ্রমিক জড়িত।



তাই এই শিল্প রক্ষা ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রান্তিক খামারি ও কৃষকদের সহজে ব্যাংক ঋণ প্রাপ্তি নিশ্চিত করা, আপদকালীন প্রণোদনা দেওয়া, মধ্যসত্ত্বভোগীদের প্রভাব বন্ধ করা, কৃষকদের আধুনিক ও উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার সম্পর্কে ধারণা দেওয়া, খামারিদের  উৎপাদন প্রক্রিয়ায় দক্ষতা অর্জনে প্রশিক্ষণ দেওয়া, প্রান্তিক খামারিদের বীমার আওতায় আনা জরুরি।

সম্প্রতি রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত ‘পোল্ট্রিটেক বাংলাদেশ: ডাচ বাংলাদেশ জ্ঞান বিতরণ’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে এই সুপারিশসমূহ উঠে আসে।


পোল্ট্রি টেক বাংলাদেশ, ব্রিডার অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (বিএবি) ও ফিড ইন্ডাস্ট্রিজ অব বাংলাদেশ যৌথভাবে এই বৈঠকের আয়োজন করে। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন নেদারল্যান্ডস ভিত্তিক কনসালট্যান্ট প্রতিষ্ঠান লারিভ ইন্টারন্যাশনালের পরিচালক ম্যাথিস ব্রিনেন ও দেশের কনসালট্যান্ট প্রতিষ্ঠান লাইটক্যাসল পার্টনারসের পরিচালক জাহিদুল আমিন।


এতে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নওরিশ পোল্ট্রি অ্যান্ড হ্যাচারির পরিচালক শামসুল আরেফিন, আফতাব বহুমুখী ফার্মের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু লুৎফে ফজলে রহিম খান, ব্রিডার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান, স্পেকট্রা হেক্সা ফিডসের পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আহসানুজ্জামান প্রমুখ। আরো উপস্থিত ছিলেন প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তরের পোল্ট্রি জিনেটিসিস্ট ড. বিবেক রায়।


এতে বিভিন্ন পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাহী কমিটির সদস্যরাসহ প্রায় ৪৫ জনেরও অধিক প্রতিনিধি অংশ নেন।


আবু লুৎফে ফজলে রহিম খান বলেন, বিভিন্ন সাংস্কৃতিক উৎসব-অনুষ্ঠানের কারণে বাংলাদেশে প্রোটিন গ্রহণের চাহিদা তুলনামূলক বেশি। মানুষের কী পরিমাণ প্রোটিন চাহিদা আছে সেটা ভালোভাবে বোঝার জন্য একটি ভোক্তা বেসলাইন স্টাডি জরুরি।


মাহবুবুর রহমান বলেন, আমাদের দেশের বাজারগুলোতে সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নেই। তাই বাজারে জীবিত মুরগি বিক্রি বন্ধে নিয়ন্ত্রণমূলক পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। এই পদক্ষেপ নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে ভূমিকা রাখবে।


তিনি বলেন, বাজারে মধ্যসত্ত্বভোগীদের প্রভাব বেশি। এই কারণে মূল উৎপাদনকারীরা ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না। ফলে ক্রেতারাও কম দামে মাছ-মুরগি কিনতে পারছেন না। বাজারে মধ্যসত্ত্বভোগীদের প্রভাব কমলে খুচরা বাজারে পোল্ট্রি পণ্যের দামও কমে আসবে।


মো. আহসানুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি মানের কৃষকদের জন্য অর্থের প্রবেশগম্যতা আরেকটি বড় চ্যালেঞ্জ। তাই এই শিল্পের প্রসারে অর্থের যোগান এবং সহজে ঋণ প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করা জরুরি। এর পাশাপাশি তাদের বীমার আওতায় আনা ও আধুনিক প্রযুক্তি সম্পর্কে জ্ঞান ও প্রশিক্ষণ জরুরি।


এসিআই গোদরেজ এগ্রোভেটের সহযোগী ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. নজরুল ইসলাম বলেন, আমরা আশা করছি ২০৩৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশের পোল্ট্রি শিল্প ২০২২ এর তুলনায় ৩০০ শতাংশ বাড়বে। তাই, আমাদের উচিত নিরাপদ খাবারের পাশাপাশি খাদ্য নিরাপত্তার দিকে বেশি মনোনিবেশ করা।