জিপিএইচ ইস্পাতের ১৫ তম বার্ষিক সাধারণ সভা

 প্রকাশ: ২১ ডিসেম্বর ২০২১, ০২:৩৬ অপরাহ্ন   |   অর্থ ও বাণিজ্য


 জিপিএইচ ইস্পাত লিমিটেডের ১৫তম বার্ষিক সাধারণ সভা সোমবার (২০ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টায় ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে অনুষ্ঠিত হয়।  সভায় সভাপতিত্ব করেন কোম্পানির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলমগীর কবির।


এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন গ্রুপ চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলমাস শিমুল, পরিচালক মো. আশরাফুজ্জামান, মো. আবদুল আহাদ, মো. আজিজুল হক, স্বতন্ত্র পরিচালক এমএ মালেক, মুখতার আহমেদ, নির্বাহী পরিচালক (গ্রুপ) এবং কোম্পানি সচিব আবু বকর সিদ্দিক এফসিএমএ। নির্বাহী পরিচালক (এফ অ্যান্ড বিডি) কামরুল ইসলাম এফসিএ অনুষ্ঠান সঞ্চালনা ও প্রশ্নের উত্তর দেন। প্রধান অর্থ কর্মকর্তা এইচএম আশরাফ উজ জামান এফসিএ এবং কোম্পানির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।  
সভায় জিপিএইচ ইস্পাত লিমিটেডের গত ৩০ জুন তারিখে সমাপ্ত বছরের আর্থিক প্রতিবেদন, সংশ্লিষ্ট নিরীক্ষা প্রতিবেদন এবং পরিচালনা পর্ষদের প্রতিবেদন সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত ও অনুমোদিত হয়। সভায় ২০২০-২১ অর্থবছরের শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ঘোষিত ২০ শতাংশ নগদ ১০ শতাংশ স্টক লভ্যাংশসহ মোট ৩০ শতাংশ লভ্যাংশ অনুমোদিত হয়।  

স্বাগত ভাষণে সভার সভাপতি মো. আলমগীর কবির বলেন, প্রতিবন্ধকতা সৃষ্ট পরিবেশে ব্যবসা পরিচালনার চাপ থাকা সত্ত্বেও কোম্পানির শেয়ারহোল্ডারদের কাছে অঙ্গীকার পূরণে পরিচালনা পর্ষদ সর্বদা সচেষ্ট ছিল।  

ইন্টিগ্রেটেড স্টিল উৎপাদনকারী হিসেবে জিপিএইচ ইস্পাত তার গ্রাহকদের চাহিদা পূরণের জন্য টেকসই এবং বিশ্বের সর্বাধুনিক ‘ইএএফ কোয়ান্টাম প্রযুক্তির’ স্টিল উৎপাদন প্রক্রিয়া ব্যবহার করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, গ্রাহকদের স্টিল চাহিদা পূরণের জন্য নির্দিষ্ট খরচ এবং সামর্থের মধ্যে সমন্বয় রয়েছে এমন বিনিয়োগ করে কোম্পানি তার কৌশল বাস্তবায়ন করেছে। জিপিএইচ ইস্পাত লিমিটেড এখন শুধু বাংলাদেশের মানচিত্রের মধ্যেই নয় বরং চীনে এমএস বিলেট রফতানির মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী তার সক্ষমতা জানান দিয়েছে। কোম্পানির দক্ষ প্রযুক্তিবিদ দ্বারা এবং কঠোর মান নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে উৎপাদিত পণ্য সব আন্তর্জাতিক মান পূরণ করেছে। দেশের চলমান অবকাঠামো উন্নয়নে মেগা প্রকল্পের কাজে স্টিলের ব্যবহার ক্রমবর্ধমান থাকায় বাংলাদেশের ইস্পাত শিল্পের ভবিষ্যৎ খুবই উজ্জ্বল।  

গ্রুপ চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে জিপিএইচের গ্রাহকদের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, জিপিএইচ ইস্পাত প্রতিষ্ঠার পর থেকে বাজারে শক্তিশালী প্রতিযোগিতার সক্ষমতা উদ্ভাবন, পরিবর্তন, এবং স্থায়িত্বের দ্বারা সফলভাবে পরিচালিত হয়ে নিষ্ঠা এবং ঐক্যের মাধ্যমে সকল ধরণের প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে সফলতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। জিপিএইচ ইস্পাতকে আরও শক্তিশালি ও সমৃদ্ধ করার জন্য টেকসই উপায়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ অব্যাহত থাকবে।  

তিনি বলেন, কোভিড ১৯ বৈশ্বিক মহামারি সত্ত্বেও ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে স্থানীয় ইঞ্জিনিয়ার, প্রযুক্তিবিদ এবং প্রযুক্তি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান প্রাইমেটাল টেকনোলোজি অস্ট্রিয়া জিএমবিএইচের অনলাইন সহায়তায় নতুন সম্প্রসারিত প্ল্যান্ট, পরবর্তীতে এমএস বিলেট এবং এমএস রডের সফল হট কমিশনিংয়ের কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর ২১ জুন তারিখ থেকে আমরা নতুন সম্প্রসারিত প্ল্যান্টের বাণিজ্যিক উৎপাদন ঘোষণা করি। গত ৩০ জুন পর্যন্ত জিপিএইচ ইস্পাত তার নতুন সম্প্রসারিত প্ল্যান্টে উৎপাদিত মোট ৮৬, ৩৭৮ মেট্রিক টন এমএস বিলেট চারটি চালানের মাধ্যমে চীনে রফতানি করেছি যা দেশের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ চালান হিসেবে স্বীকৃত। যদি অন্যান্য রফতানি খাতের মতোও এ খাতেও সরকারের কাছ থেকে নীতি সহায়তা পাওয়া যায় তাহলে ভবিষ্যতেও এই রফতানি অব্যাহত রাখা সম্ভব হবে এবং রফতানি খাতের একটি নতুন দ্বার সৃষ্টি হবে।  

জিপিএইচ ইস্পাত শুধু আর্থিক ফলাফল নিয়ে কাজ করে না বরং ভবিষ্যৎ বিনির্মাণের জন্য কর্মচারিদের পাশাপাশি সমাজ এবং প্রাকৃতিক সম্পদের টেকসই ও সংরক্ষণ এবং কল্যাণেও বিনিয়োগ করে। তিনি জানান, ২০২০-২১ হিসাবকালে জিপিএইচ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে প্রায় ৩,৯১৩.৫৭ মিলিয়ন টাকা জমা করেছে।

২০২০-২০২১ সালে জিপিএইচ ইস্পাত অপারেশনাল এবং আর্থিক উভয় ক্ষেত্রেই একটি দৃঢ় ব্যবসায় ফলাফল প্রদর্শন করতে সক্ষম হয়েছে। স্থানীয় বাজারে উচ্চ প্রতিযোগিতা এবং আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচামালের দামের অস্থিরতা সত্ত্বেও, জিপিএইচ ইস্পাতের নিট আয় আগের বছরের তুলনায় ১৯৯.৪৩ শতাংশ বেড়েছে। কর পরবর্তী মুনাফা হয়েছে ১৬৬৬.৮৯ মিলিয়ন টাকা যা আগের বছর ছিল ২৯৯.৪২ মিলিয়ন টাকা। আগামী বছরগুলোতে আমাদের প্রধান অগ্রাধিকার হবে অপারেশনাল দক্ষতা আরও উন্নত করা এবং গ্রাহকদের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক বাজারে আমাদের ইস্পাত পণ্যের পরিসর সম্প্রসারণ করা।  

সভায় স্বতন্ত্র পরিচালক এম এ মালেক, মুখতার আহমেদ সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন।

জিপিএইচের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলমাস শিমুল বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ ও ডিজিলাইটেশনের কারণে প্রত্যন্ত- অঞ্চলে গ্রাহকের কাছে প্রযুক্তি ও পণ্য দ্রুত পৌঁছে যাচ্ছে। যার ফলে জিপিএইচের পণ্যের জনপ্রিয়তা ও বিপণন বহুগুণে বেড়ে গেছে।