পরিবার ও সমাজে নারীর সম্মানজনক অবস্থান সুদৃঢ় করতে হবে
স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বেরিয়ে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশের কাতারে। এর পেছনে নারীর অবদান অপরিসীম। আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নে নারীর অবদান বড় ভূমিকা রাখছে। তৈরি পোশাক খাতসহ আরও অনেক বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠানে নারী কর্মীরা তো কাজ করছেনই, সেই সঙ্গে পরিচালক ও মালিক হিসেবেও নারী নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। এটা আমাদের বড় অর্জন। এ অগ্রগতি আমাদের এগিয়ে নিতে হবে কারন; আমাদের মোট জনসংখ্যার অর্ধেকই নারী। সমাজে নারী-পুরুষের বৈষম্য কমিয়ে পরিবার ও সমাজে নারীর সম্মানজনক অবস্থান সুদৃঢ় করতে হবে। আজ ২৬ অক্টোবর ২০২১ বিকাল ৪.০০ টায় ইনস্টিটিউট অব ওয়েলবীং বাংলাদেশ এর উদ্যোগে নারীর কাজের স্বীকৃতি, উন্নয়ন ও মর্যাদা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আয়োজিত "উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় নারী" শীর্ষক জুম ওয়েবিনারে বক্তারা এ অভিমত ব্যক্ত করেন।
উক্ত আলোচনা সভায় ইনস্টিটিউট অব ওয়েলবীইং বাংলাদেশ এর নির্বাহী পরিচালক দেবরা ইফরইমসন এর সভাপতিত্বে অতিথি আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বরিশাল বিশ^বিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ক্যামেলিয়া খান; শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিক্যাল কলেজের সহকারী সার্জন ডাক্তার জান্নাতুন নাঈম এবং খুলনা বিশ^বিদ্যালয়ের আইন ডিসিপ্লিন বিভাগ প্রভাষক তানিয়া সুলতান। আলোচনায় সভায় সঞ্চালনা করেন শ্রী শান্তনু বিশ^াস।
দেবরা ইফরইমসন বলেন, পরিবার, সমাজ ও দেশের উন্নয়নে নারীরা প্রায় সমানভাবে অবদান রাখছেন। কিন্তুনারীর প্রতিসহিংসতা, নারীকে অবজ্ঞা, সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে অবমূল্যায়ন এবং নারীর গৃহস্থালী কাজকে পারিবারিক ও রাষ্ট্রীয় ভাবে স্বীকৃতি প্রদান না করায় নারীর অগ্রগতিকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিচ্ছে।
অধ্যাপক ক্যামেলিয়া খান বলেন, নারীর ক্ষমতায়ন বৃদ্ধি করতে রাষ্ট্রের সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মকান্ডে নারীকে যুক্ত করতে রাষ্ট্রের আইন ও কর্মপন্থা ঘোষণা এবং বাস্তবায়ন করা। নারীকে মানুষ হিসেবে গণ্য করা হতে বিরত রাখতে নীতিবাচক ভাবে উপস্থাপন ও সমাজের মানুষের কাছে খাটো করে এবং নারীর প্রতি বৈষম্য সৃষ্টি করে এমন সব বিজ্ঞাপন প্রচলিত আইনে নিষিদ্ধ করা।
জান্নাতুন নাঈম বলেন, বিজ্ঞাপনে নারীকে পণ্য হিসেবে উপস্থাপন না করা, নারীর মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রতিবন্ধকতা দূরীকরনে সামাজিক আন্দোলন তৈরি করতে গণমাধ্যমের সহায়তায় প্রচার ও প্রচারনা শুরু করা। নারীর ক্ষমতায়ন ও মর্যাদায়নের বিষয়টি পাঠ্যবইয়ে অন্তর্ভুক্ত করা। নারীর গৃহস্থালি কাজকে রাষ্ট্রের জাতীয় আয়ের সাথে যুক্ত করা।
তানিয়া সুলতান বলেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি’স) অন্যতম প্রতিপাদ্য হল কাউকে পিছনে পেলে রাখা যাবে না। এসডিজি’স জোরদার ও সফল করে তুলতে প্রয়োজন সবার একত্রিত চেষ্টা ও পরিবর্তনের মনোভাব থাকা দরকার। তা না হলে, লিঙ্গবৈষম্য দূর করা এবং নারীর ক্ষমতায়ন করার ব্যাপারটি মোটেও খুব একটা সহজ কাজ হবে না। তাই পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় ভাবে নারীর কাজকে মূল্যায়নের জন্য বিশেষ করে এই সমতা ও সামাজিক নিরাপত্তা প্রক্রিয়াকে জোরদার করতে হবে।