ওমরাহ হজের দরজা খুললো : করোনার প্রভাবে ব্যয় বাড়ছে

 প্রকাশ: ০৫ অগাস্ট ২০২১, ১০:৪২ পূর্বাহ্ন   |   ধর্ম



মহামারী নভেল করোনাভাইরাসের কারণেই গত দুই বছর ধরে বিশেষ শর্ত মেনে সীমিত পরিসরে হজ আয়োজন করে সৌদি সরকার। এমনকি বাইরের দেশ থেকে কাউকে হজের জন্য অনুমোদনও দেয়া হয়নি। শুধু সৌদিতে অবস্থানকারী স্থানীয় ও ১৫০ দেশের প্রবাসীদের হজের অনুমোদন দেয়া হয়।অন্যদিকে মহামারী শুরু হওয়ার পর দীর্ঘ প্রায় আট মাস ওমরাহ কার্যক্রম বন্ধ ছিল। পরে গত বছরের অক্টোবরে সৌদি নাগরিক ও বাসিন্দারা ওমরাহ পালনের অনুমতি পান। কিন্তু বিশ্বের কয়েকটি দেশে করোনার দ্বিতীয় ও তৃতীয় ঢেউ ছড়িয়ে পড়ায় সংক্রমণ এড়াতে তা স্থগিত হয়ে যায়।

করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকেই বাংলাদেশসহ অনেক দেশের জন্য দীর্ঘদিন বন্ধ রয়েছে ওমরাহ হজ।  টানা ১৭ মাস পর পুনরায় বাংলাদেশিরা পবিত্র ওমরাহ হজ পালনের সুযোগ পেতে যাচ্ছেন। আগামী ১ মহরম থেকে (১০ আগস্ট) থেকে করোনা টিকা নেওয়া বিদেশিরা সৌদি গিয়ে ওমরাহ পালন করতে পারবেন। তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অনুমতি মিললেও বাংলাদেশীদের ওমরাহে যেতে কমপক্ষে আরো এক মাস অপেক্ষা করতে হবে। একই সঙ্গে করোনার কারণে যাতায়াত, হোটেলসহ সবকিছুতে শর্ত পালন সাপেক্ষে ব্যয় বাড়বে ওমরাহ হজের। গতকাল সোমবার দেশটির হজ ও ওমরা বিষয়ক মন্ত্রণালয় কয়েকটি শর্তপূরণ সাপেক্ষ বাংলাদেশি ওমরাহ প্রত্যাশীদের প্রেরণের জন্য হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশকে (হাব) চিঠি পাঠিয়েছে।

চিঠিতে কয়েকটি শর্ত দেওয়া হয়েছে। শর্তের মধ্যে রয়েছে: সৌদি সরকারের অনুমোদিত প্রতিটি ওমরাহ এজেন্সিকে ২ লাখ সৌদি রিয়ালের ( ৪৫ লাখ ২৪ হাজার টাকা) ব্যাংক গ্যারান্টি দিতে হবে।  ১৮ বছর বা তার বেশি বয়সীরাই ওমরাহ পালনের জন্য সৌদিতে প্রবেশের সুযোগ পাবেন। হজযাত্রীদের প্রত্যেককে ওমরাহ পালনের জন্য সৌদি আরবে যেতে ফাইজার, মডার্না, অ্যাস্ট্রাজেনেকা বা জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকার পূর্ণ ডোজ সম্পন্ন করতে হবে।যারা টিকা নেননি বা উল্লেখিত চারটি টিকার বাইরে অন্য কোনো টিকা নিয়েছেন তাদের কোভিড নেগেটিভ রিপোর্ট বাধ্যতামূলক ও সৌদি আরব পৌঁছে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। এছাড়া ভিসার জন্য মক্কা-মদিনায় হোটেলের অগ্রিম রুম ভাড়া পরিশোধের রশিদ জমা দিতে হবে।


হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি  বলেন, সৌদি আরব শুধু ঘোষণা করেছে যে আগামী ১ মহররম থেকে বাংলাদেশীদের ওমরাহ হজে যেতে বাধা নেই। তবে আরো অনেক আনুষঙ্গিক কাজ এখনো বাকি। অন্তত আগামী মাসের আগে বাংলাদেশীদের ওমরাহ হজে যাওয়ার সুযোগ নেই বলা যায়। করোনা মহামারী শুরু হওয়ার আগে প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে প্রায় আড়াই লাখ বাংলাদেশী ওমরাহ হজে যেতেন। এয়ারলাইনস ও হোটেলের মান অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের প্যাকেজে বাংলাদেশীরা যেতেন। তবে এজেন্সিভেদে সর্বনিম্ন প্যাকেজ ছিল এক-দেড় লাখ টাকার মধ্যে। এর মধ্যে এয়ারলাইনসের সর্বনিম্ন রিটার্ন ভাড়া ছিল ৫০ থেকে ৫৫ হাজার টাকা।
এ বছর করোনার কারণে ওমরাহ হজের খরচ বাড়বে। তবে কত বাড়বে তা চুক্তির আগে বলা সম্ভব না। আগে হোটেল রুম কয়েকজন শেয়ার করতে পারতেন। এবার হয়তো এক রুমে দুজনের বেশি থাকতে পারবেন না। এভাবে করোনা পরিস্থিতির কারণে সব খাতেই দ্বিগুণের মতো ব্যয় করতে হবে।

তবে সংক্রমণ বাড়ায় ভারত, পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, মিসর, তুরস্ক, আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, দক্ষিণ আফ্রিকা, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইথিওপিয়া, ভিয়েতনাম, আফগানিস্তান ও লেবাননের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকছে। ফলে এসব দেশের নাগরিকরা আপাতত ওমরাহ পালনের সুযোগ পাচ্ছেন না।